বিভাগের নাম |
উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ |
||||||||||||||||||||
বিভাগীয় প্রধানের নাম ও পদবী |
ড. শামছুন্নাহার বেগম, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা |
||||||||||||||||||||
বিভাগীয় প্রধানের ছবি |
|||||||||||||||||||||
বিভাগের বর্ণনা (সর্বনিম্ন ২৫০ শব্দ) |
বিনা প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকেই উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ যাত্রা শুরু করে। শুরু থেকেই এই বিভাগের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারসহ প্রচলিত প্রজনন পদ্ধতি এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন ফসলের (ধান, গম, তৈলবীজ, ডাল, আঁশ ফসল) স্বল্প জীবন কাল সম্পন্ন উচ্চফলনশীল, পুষ্টি সমৃদ্ধ ও ঘাত সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন। এছাড়া, উচ্চফলনশীল প্রিমিয়াম বৈশিষ্ট্যের ধানের জাত, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ও ভিটামিন (জিঙ্ক, আয়রণ, বিটা-ক্যারোটিন) সমৃদ্ধ ধানের জাত এবং মানব স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য (নিম্ন জিআই, এন্টি-অক্সিডেন্ট, গাবা) সমৃদ্ধ ফসলের জাত উদ্ভাবন করাও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের বহুবিধ গবেষণা কর্মকান্ডের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিনা উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ এ পর্যন্ত বিভিন্ন ফসলের মোট ৮৮টি জাত উদ্ভাবন করেছে যা বিনা ও জাতীয় বীজ কর্তৃক অবমুক্ত হয়েছে এবং দেশের বিভিন্ন কৃষি পরিবেশ অঞ্চলে কৃষকের মাঠে আবাদ হচ্ছে। বর্তমানে বিনার উদ্ভিদ প্রজননবিদগণ মিউটেশন ব্রিডিং ছাড়াও প্রচলিত প্রজনন পদ্ধতি এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যেমন মার্কার এ্যাসিস্টেড ব্রীডিং ইত্যাদি গবেষণা কর্মকান্ডে নিয়োজিত আছেন যার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল, ঘাত সহিষ্ণু ও উন্নত মানের ফসলের জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের অগ্রগতিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করা। |
||||||||||||||||||||
ম্যান্ডেট |
উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের ম্যান্ডেট:
|
||||||||||||||||||||
সাফল্য (উল্লেখযোগ্য জাত/প্রযুক্তি) |
উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের সাফল্য: পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের জাত উদ্ভাবনে উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ মূল ভূমিকা পালন করে। বিনা প্রতিষ্ঠার পর হতে এ বিভাগ অদ্যাবধি ধান, পাট, গম, তেল ও ডাল জাতীয় ফসলসহ মোট ১৪ টি ফসলের ৮৮ টি জাত উদ্ভাবন করেছে। এ বিভাগ হতে উদ্ভাবিত স্বল্প জীবন কাল সম্পন্ন, উচ্চফলনশীল, লবণাক্ততা, জলমগ্নতা, খরা সহিঞ্চু জাত সমূহ প্রতিকূল পরিবেশে ভাল ফলন দিয়ে দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। লবণাক্ততা এলাকায় চাষ উপযোগী ফসলের জাতসমূহঃ বিনা উদ্ভাবিত লবণ সহিষ্ণু ধানের জাত বিনাধান-৮ (৮-১০ ডেসি সিমেন/মিটার) ও বিনাধান-১০ (১০-১২ ডেসি সিমেন/মিটার) হেক্টর প্রতি গড়ে ৫ টনেরও অধিক ফলন দিতে সক্ষম। বিনা উদ্ভাবিত তেল ফসলের জাত সমূহের মধ্যে রয়েছে লবণাক্ততা সহিষ্ণু সরিষার দু’টি (বিনাসরিষা-৭ ও বিনাসরিষা-৮), চিনাবাদামের দু’টি (বিনাচীনাবাদাম-৫ ও বিনাচীনাবাদাম-৬) ও সয়াবিনের দুটি (বিনাসয়াবিন-২ ও বিনাসয়াবিন-৬) জাত। এদের মধ্যে ৬ ডেসি সিমেন/মিটার লবণাক্ততা সহনশীল সরিষার জাত দু’টি যথাক্রমে ২.০ ও ২.২ টন/হে ফলন দিতে পারে ও এদের বীজে তলেরে পরিমাণ শতকরা ৪৩ ও ৪০ ভাগ। বিনা উদ্ভাবিত চিনাবাদাম ও সয়াবিনের জাতসমূহ প্রায় ৮ ডেসি সিমেন/মিটার মাত্রার লবণাক্ততা সহনশীল। তাছাড়া বিনা উদ্ভাবিত বিনাগম-১ জাতটি অঙ্গজ বৃদ্ধি পর্যায় থেকে পরিপক্কতা আসা পর্যন্ত সময়ে ১২ ডি.এস./মি. লবনাক্ততা সহ্য করতে জোয়ার-ভাটাকবলিত অলবণাক্ত ও পোল্ডার বেষ্টিত লবণাক্ত এলাকার জন্য ২০২০ সালে বিনা উদ্বাবন করেছে বিনাধান-২৩। জাতটি লবণাক্ততা ও বন্যা কবলিত এলাকার জন্য আমন মৌসুমে চাষ উপযোগী। পরিপক্ক অবস্থায় এ জাতটি ৮ডিএস/মি. মাত্রার লবণাক্ততা ও ১৫ দিন পর্যন্ত জলমগ্নতা সহ্য করতে পারে। জাতটি মাজরা পোকার প্রতি মধ্যম প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। ধানের চাল মাঝারি চিকন। জীবনকাল ১১৫-১২৫ দিন এবং ফলন ৫.৩-৫.৮ টন/হেক্টর যা স্থানীয় জাত সাদা মোটা ও দুধ কলমের হতে হেক্টরপ্রতি ১-১.৫ মে. টন বেশি। আকস্মিক বন্যা সমস্যার সমাধানে বিনা’র ভূমিকাঃ ২০১৩ সালে বিনা কর্তৃক উদ্ভাবিত বন্যাসহিষ্ণু জাত বিনাধান-১১ ও বিনাধান-১২ (২০-২৫ দিন জলমগ্নতা সহ্য করতে পারে) হতে বন্যা আক্রান্ত জমিতে হেক্টর প্রতি ফলন ৪.০-৪.৫ টন এবং বন্যামুক্ত স্বাভাবিক জমিতে ৫.০-৫.৫ টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। বিনাধান-১২ এর চাল সরু ও চিকন, ভাত ঝরঝরে ও সুম্বাদু। বর্তমানে দেশের ২০ হাজার হেক্টরের বেশী আকস্মিক বন্যা প্রবণ এলাকায় বিনা উদ্ভাবিত এই জাতদুটি চাষাবাদ হচ্ছে।
উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীল জাত উদ্ভাবনে বিনা’র ভূমিকাঃ বিনাধান-১৪ জাতটি ফেব্রুয়ারি মাসের ২য় সপ্তাহ থেকে মার্চ মাসের ২য় সপ্তাহ পর্যন্ত রোপণ করা যায়। ফলে এর ফুল আসে এপ্রিল মাসে যখন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩-৩৬০সে. এর মধ্যে উঠানামা করে। কিন্তু বিনাধান-১৪ এরকম অবস্থায়ও গড়ে হেক্টর ৬.৮৫ টন ফলন দিতে সক্ষম। অপরদিকে, বিনাচিনাবাদাম-১ ও বিনাচিনাবাদাম-২ উচ্চ তাপমাত্রায় (৪০০সে. পর্যন্ত) ভাল ফলন দিতে সক্ষম। প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ধান: বিনাধান-১৫, বিনাধান-১৬ ও বিনাধান-২৫ জাতসমূহ বিদেশে রপ্তানিযোগ্য ও উচ্চফলশীল আগাম জাত। এদর চাল লম্বা ও চিকন। স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন হওয়ায় জাতসমূহ আবাদের পর সহজেই গম, আলু, সরিষা ও অন্যান্য রবি ফসল চাষ করা যায়। খরা প্রবণ এলাকার জন্য পানি সাশ্রয়ী জাত উদ্ভাবনে বিনা’র ভূমিকাঃ বিনার খরা প্রবণ এলাকার কৃষিকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে বিনা ২০১৫ সালে ৩০% পানি ও সার সাশ্রয়ী বিনাধান-১৭ উদ্ভাবন করে। স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন ও গড়ে ৬.৮ টন/হে ফলন দিতে সক্ষম। তাছাড়া ২০১৭ সালে বিনা কর্তৃক উদ্ভাবিত বিনাধান-১৯ জাতটি খরা সহ্য ক্ষমতা সম্পন্ন/বৃষ্টি নির্ভর অবস্থায় সরাসরি সারিতে বপনযোগ্য (ডিবলিং পদ্ধতিতে), স্বল্প জীবন কাল সম্পন্ন (৯০-১০০ দিন) ও উচ্চ ফলনশীল (৪.০-৬.০ টন/হে.) আউশ মৌসুমের উপযোগী একটি জাত যা বরেন্দ্র এলাকাসহ পাহাড়ী এলাকায়ও চাষযোগ্য। তাছাড়া খরিফ-১ মৌসুমে যে সব এলাকায় সেচের সুবিধা কম সেখানে খরা সহনশীল তিলের জাত বিনাতিল-১, বিনাতিল-২, বিনাতিল-৩ ও বিনাতিল-৪ চাষের মাধ্যমে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশের ভোজ্য তেলের ঘাটতি কমিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। তাছাড়া, মুগের সবচেয়ে জনপ্রিয় তিনটি জাত বিনামুগ-৫, বিনামুগ-৭ ও বিনামুগ-৮, মসুর (বিনামসুর-৫, বিনামসুর-৬, বিনামসুর-৯), বিনাখেসারী-১, বিনামাস-১ ও বিনামাস-২ এবং ছোলার (বিনাছোলা-৪, বিনাছোলা-১০ ও বিনাছোলা-১১) জাতগুলো খরা সহনশীল হওয়ায় দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে খরা প্রবন এলকায় ব্যাপকভাবে চাষ করে কৃষকগণ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এক নজরে উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের উদ্ভাবিত ফসলের জাতঃ
|
||||||||||||||||||||
জনবল |
|
||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক কার্যক্রম |
|