Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২১st এপ্রিল ২০২৪

বিনা তিল৫

জাতের নাম:

 

বিনা তিল৫

জাতের বৈশিষ্ট্য:

 

  • গাছ শাখাবিশিষ্ট এবং প্রতি গাছে প্রাথমিক শাখার সংখ্যা ২-৪টি
  • বীজাবরণ হালকা বাদামী রঙের
  • বীজে তেলের পরিমাণ ৪৯%
  • জীবনকাল ৮২-৮৬ দিন
  • সর্বোচ্চ ফলন ১.৬ টন/হেক্টর

জাতটি ভারী বৃষ্টিজনিত কারণে ২-৩ দিন পর্যন্ত সাময়িক জলমগ্নতা সহনশীল

জমি ও মাটি:

 

বেলে দো-আঁশ বা দো-আঁশ মাটি জাতটি চাষের জন্য উপযুক্ত তবে পানি নিস্কাশনের সুবিধাযুক্ত অন্যান্য মাটিতেও জাতটি চাষ করা যেতে পারে। জমির প্রকারভেদে তিন থেকে চারটি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ভালোভাবে ঝুরঝুরে করে জমি প্রস্তুত করতে হবে।

বপনের পদ্ধতি:

 

মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ (মধ্য ফাগুন) বিনা তিল৫ এর বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। জমিতে রস বেশি হলে অল্প গভীরে বীজ বপন করতে হবে। অন্যদিকে বীজ বপনের সময় মাটি বেশি শুষ্ক হলে বপনের পূর্বে একটি হালকা সেচ দিয়ে জোঁ আসলে জমি প্রস্তুত করে বীজ বপন করতে হবে। বীজ ছিটিয়ে বা সারিতে বপন করা যেতে পারে। বীজ ও শুকনো বালু একত্রে মিশিয়ে ছিটিয়ে বপন করলে সমান দুরত্বে বীজ ফেলতে সুবিধে হয়। জাতটির জন্য সারি থেকে সারির দুরত্ব ২৫-৩০ সেন্টিমিটার অর্থাৎ ১০-১২ ইঞ্চি এবং সারিতে গাছ থেকে গাছের দুরত্ব ৫-৮ সেন্টিমিটার অর্থাৎ ২-৩ ইঞ্চি দিতে হবে।

বীজের হার:

 

ছিটিয়ে বপনের ক্ষেত্রে হেক্টর প্রতি ৭.৫ কেজি এবং সারিতে বপন করার জন্য ৬ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়।

সারের পরিমান ও প্রয়োগ পদ্ধতি:

 

জমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে সারের মাত্রা কম-বেশি হয়। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় সার সুপারিশমালা অনুসরণ করতে হবে। তবে সাধারণভাবে একরে ৪০-৫০ কেজি ইউরিয়া, ৫২-৬০ কেজি টিএসপি, ১৬-২০ কেজি এমওপি এবং ৪০-৪৫ কেজি জিপসাম সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করা যেতে পারে। জমি প্রস্ত্ততের শেষ চাষের সময় অর্ধেক ইউরিয়া ও অন্যান্য সার এবং বাকি অর্ধেক ইউরিয়া বীজ বপনের ২৫-৩০ দিন পর গাছে ফুল আসার সময় ফসলে উপরি প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া জমিতে জিংক ও বোরন ঘাটতি এলাকায় একর প্রতি যথাক্রমে ২ কেজি হারে জিংক সালফেট ও ৪ কেজি হারে বরিক এসিড প্রয়োগ করতে হবে।

সেচ ও নিস্কাশন:

 

সাধারণত: তিল চাষাবাদে সেচের প্রয়োজন হয় না। বীজ বপনের সময় মাটিতে রসের অভাব থাকলে একটি হালকা সেচ দিয়ে বীজ গজানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বীজ বপনের ২৫-৩০ দিন পর ফুল আসার সময় জমি শুষ্ক হলে একবার এবং ভীষণ খরা হলে ৫৫-৬০ দিন পর ফল ধরার সময় আর  একবার সেচ দিতে হবে। তিল ফসল জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না, তাই জমির মধ্যে কিছুদুর পর পর নালা কেটে বৃষ্টি বা সেচের অতিরিক্ত পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে ফসলকে রক্ষা করতে হবে।

আগাছা দমন এবং মালচিং:

 

অধিক ফলন পেতে হলে জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে। চারা অবস্থায় প্রায় ২০ দিন পর্যন্ত গাছের বৃদ্ধি ধীর গতিতে হতে থাকে। ফলে এ সময় জমির আগাছা দ্রুত বেড়ে তিল গাছ ঢেকে ফেলতে পারে। তাই এ সময় একটি নিড়ানী দিতে হবে। তাছাড়া বীজ বপনের পূর্বেই জমি থেকে ভালভাবে আগাছা পরিস্কার করে নিতে হবে।

বালাই ব্যবস্থাপনা:

 

বিছা পোকা, হক মথ ও কান্ডপঁচা রোগ তিল ফসলের ক্ষতি করে। জমিতে কান্ডপঁচা রোগ দেখা দিলে সাথে সাথে বাজারে প্রচলিত ছত্রাকনাশক পাওয়া যায় যেমন বেভিষ্টিন বা ডাইথেন এম-৪৫ দুই গ্রাম হারে বা রোভরাল এক গ্রাম হারে প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ৮-১০ দিন পর পর ২-৩ বার ফসলে স্প্রে করে রোগটি দমন করা যেতে পারে। বিছাপোকা ডিম পাড়ার সাথে সাথে ডিমসহ পাতা ছিড়ে কেরোসিন মিশ্রিত পানিতে বা ডিজেলে ডুবিয়ে মেরে ফেলা যেতে পারে। পোকার আক্রমন বেশি হলে নাইট্রো ৫০৫ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মি.লি. মিশিয়ে স্প্রে করেও বয়স্ক কীড়া দমন করা যেতে পারে। জলাবদ্ধতা বা অতিরিক্ত আর্দ্রতা তিল গাছের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এক্ষেত্রে দ্রুত গোড়াপঁচা রোগ হয়ে তিলগাছ মরে যায়। এ জন্য তিল চাষের জমি প্রস্ত্ততের সময় পানি নিষ্কাশনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

হেক্টর প্রতি ফলনঃ

 

প্রতি হেক্টরে গড়ে ১.৪০ টন ফলন পাওয়া যায়

 

চিত্র: বিনা তিল৫