Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৩rd সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিনাধান-৬

 

জাতের নামঃ
বিনাধান-৬
জাতের বৈশিষ্ট্যঃ

এটি একটি উচ্চ ফলনশীল ও ভাল গুণাগুণ সম্পন্ন বোরো জাত। চারার উচ্চতা অন্যান্য উফশী বোরো জাতের চারা অপেক্ষা বেশী বলে শীতকালে রোপা লাগানোর সুবিধা হয়।

পূর্ণ বয়স্ক গাছের উচ্চতা ১১৫-১২০ সেমি। বোরোর অন্যান্য জাত অপেক্ষা গাছ তুলনামূলকভাবে লম্বা হলেও হেলে পড়েনা। বেশি পরিমাণ খড় পাওয়া যায়।

পাতা গাঢ় সবুজ, লম্বা ও চওড়া।

ব্রিধান-২৯ অপেক্ষা ৫-৭ দিন আগে পাকে। বীজ বপন হতে কাটা পর্যমত এর জীবনকাল ১৬০-১৬৫দিন।

ব্রিধান-২৮ অপেক্ষা বেশী এবং ব্রিধান-২৯ এর সমান ফলন দেয়। গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৫-৬ টন (একর প্রতি ৫০-৬০ মণ) । যথোপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টর প্রতি ৭ টনের (একর প্রতি ৭০ মণ) অধিক ফলন দেয়।

এই জাতের ধান ও চাউল মাঝারী মোটা।

জমি ও মাটিঃ
বেলে দো-আঁশ এবং এটেল দো-আঁশ জমি এই জাতের চাষের উপযোগী।
জমি তৈরীঃ
জাতটির চাষাবাদ পদ্ধতি অন্যান্য উফশী রোপা আমন জাতের মতই। 
বপণের সময়ঃ
নভেম্বর মাসের ৩য় সপ্তাহ হতে ডিসেম্বরে ৩য় সপ্তাহ (অগ্রহায়ণের ১ম সপ্তাহ থেকে পৌষের ১ম সপ্তাহ) ।
বীজ হারঃ
প্রতি হেক্টর জমি চাষের জন্য ২৫-৩০ কেজি বা এক একর জমির জন্য ১০-১২ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়।
বীজ শোধনঃ
প্রতি ১০ কেজি বীজে ২৫ গ্রাম ভিটাভ্যাক্স-২০০ বা ব্যাভিস্টিন ব্যবহার করা যেতে পারে। বীজ শোধনের জন্য মাত্রানুযায়ী ছত্রাকনাশক মিশিয়ে একটি বদ্ধ পাত্রে ৪৮ ঘন্টা রাখা আবশ্যক।
সার ও প্রয়োগ পদ্ধতিঃ

প্রতি হেক্টরেঃ

বীজ তলার জন্য

উর্বর ও স্বল্প উর্বর জমিতে বীজতলা তৈরী করলে কোনরূপ সার প্রয়োজন হয়না। অনুর্বর ও স্বল্প উর্বর জমিতে  কেবল দুই কেজি পঁচা গোবর বা আবর্জনা সার প্রয়োগ করলেই চলে। চারা গজানোর পর গাছ হলুদ হয়ে গেলে  দু’সপ্তাহ পর প্রতি বর্গ মিটারে ৭ গ্রাম ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগের পর জমি থেকে পানি নিষ্কাশণ করা যাবেনা।

রোপা ক্ষেতের জন্য

ইউরিয়াঃ  ২০০-২৪৫ কেজি, টিএসপিঃ ১০০-১৫০ কেজি, এমওপিঃ ১৫০-২০০ কেজি, জিপসামঃ ৮০-১০০ কেজি ও দস্তাঃ ৩.০-৬.০ কেজি।

প্রয়োগের নিয়মঃ

রোপার জন্য জমি তৈরীর শেষ চাষের আগে সম্পূর্ণ টিএসপি এবং এমওপি জমিতে সমভাবে ছিটিয়ে চাষের মাধ্যমে মাটির সাথে ভালভাবে  মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সারের অর্ধেক পরিমাণ চারা রোপনের ৭-৮ দিন পর,  এবং বাকি অর্ধেক ৩০-৩৫ দিন পর জমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার প্রয়োগের ২/১ দিন আগে জমির  অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে হবে এবং প্রয়োজন হলে আগাছা দমন করতে হবে। জমির উর্বরতা ও ফসলের অবস্থার উপর নির্ভর করে ইউরিয়া সার প্রয়োগ মাত্রার তারতম্য করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে টিএসপি ও দসত্মা সার একই সাথে প্রয়োগ করা যাবেনা। তাই এক্ষেত্রে একচাষ পূর্বে টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে এবং শেষ চাষের সময় ইউরিয়া ছাড়া অন্যান্য সার ছিটিয়ে প্রয়োগ করা অবশ্যক।

সেচ ও নিষ্কাশনঃ
জমি তৈরীর সময় ২/৩ বার স্বাদু পানি দিয়ে লবণাক্ত পানি বের করে দিলে জমির লবণাক্ততা অনেকটা কমে যায়। তাছাড়া কুশি, ফুল আসা ও পরিপক্কতার সময় লবণের মাত্রা ১০ ডিএস/মিটারের বেশী হলে স্বাদু পানি দিয়ে লবণাক্ততা কমিয়ে আনতে হবে। ধান পাকার ১০-১২ দিন আগে জমির পানি শুকিয়ে ফেলা ভাল।
আগাছা দমন ও মালচিংঃ
চারা রোপনের পর আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী বা হাতের সাহায্যে আগাছা পরিষ্কার এবং মাটি নরম করে মালচিং করতে হবে ।
বালাই ব্যবস্থাপনাঃ
জাতটি বিভিন্ন রোগ যথা-পাতা পোড়া, খোল পোড়া, খোল পঁচা, ইত্যাদি রোগ তুলনামূলকভাবে প্রতিরোধ করতে পারে। মাজরা পোকা, সবুজ পাতা ফড়িং বাদামী গাছ ফড়িং ইত্যাদি পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ও তুলনামূলকভাবে বেশী। রোগবালাই ও কীট পতঙ্গের আক্রমণ দেখা দিলে নিকটস্থ কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার উপদেশ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পেকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দিলে প্রচলিত তরল বা দানাদার কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া এই জাতের রোগবালাই ও কীট পতঙ্গের আক্রমণ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে বেশি। তবে রোগবালাই যেমন- খোলা ঝলসানো দেখা দিলে -হোমাই ৮০ ডব্লিইপি বা টিলট একর প্রতি ১ -১.২ কেজি হারে ১০০ লিটার পানিতে মিশিয়ে থোড় আসার সময় বা তার পর পরই স্প্রে করা যেতে পারে। এছাড়া ব্লস্ট রোগ দমনের জন্য হিনোসান ৫০ ইসি বা টপসিন মিথাইল ৮০ মিলি ৬০-১০০ লিটার পানিতে ২৫ শতাংশ জমিমে স্প্রে করা যেতে পারে। পোকামাকড় দমনের জন্য আই পি এম পদ্ধতি ভাল। জমিতে মাজরা পোকা, পাতা  পোষক পোকা, ফড়িং বা অন্যান্য কীট পতঙ্গের আক্রমণ হলে ডায়াজিনন-১০ (দানাদার) একর প্রতি ৬.৮ কেজি হারে ছিটিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে বা সবিক্রন-৪২৫ ইসি ২০ মি.লি. ১০ লিটার পানিতে মিশ্রিত করে ২০০ বর্গ মি. (৫ শতাংশ) জমিতে স্প্রে করা যেতে পারে। পোকামাকড় ও রোগবালাই আক্রমণ দেখা দিলে প্রয়োজনবোধে নিকটস্থ কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা/কর্মীর উপদেশ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেগে পারে।
হেক্টর প্রতি ফলনঃ
গড় ৭.৫ টন।

 

প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন ধান ফসল বিশেষজ্ঞ

(সকাল ৯ টা-বিকাল ৫টা)

কলকরুনঃ +৮৮০১৭১১৬২৮০৭২১
ই-মেইলঃ sbluna98@yahoo.com.com

দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম ও পদবী
ড. শামছুন্নহার বেগম
মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা
উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ, বিনা, ময়মনসিংহ-২২০২।

 

                চিত্র: বিনাধান-৬ এর মাঠ এবং বীজ