জাতের নামঃ |
বিনাতিল-৩ |
জাতের বিশেষ বৈশিষ্ট্যঃ |
জাতটি ৬ ডিএস/মি. মাত্রা পর্যন্ত লবণাক্ততা সহনশীল |
অন্যান্য বৈশিষ্ট্যঃ |
গাছ শাখাবিশিষ্ট এবং প্রতি গাছে প্রাথমিক শাখার সংখ্যা ২-৪টি; বীজাবরণ হালকা কালো রঙের; বীজে তেলের পরিমাণ ৪৩%। |
জীবনকালঃ |
৮৫-৮৭ দিন |
সর্বোচ্চ ফলনঃ |
১.৮ টন/হেক্টর (১৯ মন/একর) |
গড় ফলনঃ |
১.৫ টন/হেক্টর (১৬ মন/একর) |
জমি ও মাটিঃ |
বেলে দো-আঁশ বা দো-আঁশ মাটি জাতটি চাষের জন্য উপযুক্ত তবে পানি নিস্কাশনের সুবিধাযুক্ত অন্যান্য মাটিতেও জাতটি চাষ করা যেতে পারে। |
জমি তৈরিঃ |
জমির প্রকারভেদে ৩-৪টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ভালোভাবে ঝুরঝুরে করে জমি প্রস্তুত করতে হবে। |
বপনের সময়ঃ |
খরিফ-১ মৌসুমে মধ্য ফেব্রুয়ারী হতে মধ্য মার্চ (ফাল্গুন মাস) পর্যন্ত বপন করতে হবে। |
বীজের হার ও বপন পদ্ধতিঃ |
ছিটিয়ে বপনের ক্ষেত্রে হেক্টর প্রতি ৭.৫-৮.০ কেজি এবং সারিতে বপন করার জন্য হেক্টর প্রতি ৬.০-৭.০ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়। সারিতে বপনের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দূরত্ব ১২ ইঞ্চি এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১.৫-২.০ ইঞ্চি রাখতে হবে। |
সার ও প্রয়োগ পদ্ধতিঃ |
জাতটি চাষের জন্য প্রতি একরে ৪০-৫০ কেজি ইউরিয়া, ৫২-৬০ কেজি টিএসপি, ১৬-২০ কেজি এমওপি এবং ৪০-৪৫ জিপসাম সার শেষ চাষের পূর্বে প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। জমি প্রস্তুতের শেষ চাষের পূর্বে অর্ধেক ইউরিয়া ও অন্যান্য সার প্রয়োগ করতে হবে। বাকি অর্ধেক ইউরিয়া বীজ বপনের ২৫-৩০ দিন পর গাছে ফুল আসার সময় ফসলে উপরি প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া জমিতে জিংক ও বোরন ঘাটতি এলাকায় একর প্রতি যথাক্রমে ৪ কেজি হারে জিংক সালফেট ও ৩ কেজি হারে বরিক এসিড প্রয়োগ করতে হবে। |
সেচ ও নিস্কাশনঃ |
জাতটি চাষের জন্য সাধারণত সেচের প্রয়োজন হয় না। বীজ বপনের সময় মাটিতে রসের অভাব থাকলে একটি হালকা সেচ দিয়ে বীজ গজানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বীজ বপনের ২৫-৩০ দিন পর ফুল আসার সময় জমি শুষ্ক হলে একবার এবং ভীষণ খরা হলে ৫৫-৬০ দিন পর ফল ধরার সময় আর একবার সেচ দিতে হবে। তিল ফসল জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না, তাই জমির মধ্যে কিছুদুর পর পর নালা কেটে বৃষ্টি বা সেচের অতিরিক্ত পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে ফসলকে রক্ষা করতে হবে। |
আগাছা দমন এবং মালচিংঃ |
অধিক ফলন পেতে হলে জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে। চারা অবস্থায় প্রায় ২০ দিন পর্যন্ত গাছের বৃদ্ধি ধীর গতিতে হতে থাকে। ফলে এ সময় জমির আগাছা দ্রুত বেড়ে তিল গাছ ঢেকে ফেলতে পারে। তাই এ সময় একটি নিড়ানী দিতে হবে। তাছাড়া বীজ বপনের পূর্বেই জমি থেকে ভালভাবে আগাছা পরিস্কার করে নিতে হবে। |
বালাই ব্যবস্থাপনাঃ |
কান্ড পঁচা রোগ, বিছা পোকা ও হক মথ তিল ফসলের বেশ ক্ষতি করে। কান্ড পঁচা রোগ: এ রোগের আক্রমন কমানোর জন্য বীজ বপনের পূর্বে ২-৩ গ্রাম ভিটাভেক্স-২০০ ছত্রাকনাশক প্রতি কেজি বীজের সাথে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। জমিতে কান্ডপঁচা রোগ দেখা দিলে সাথে সাথে বাজারে প্রচলিত ছত্রাকনাশক পাওয়া যায় যেমন বেভিষ্টিন বা ডাইথেন এম-৪৫ দুই গ্রাম হারে বা রোভরাল এক গ্রাম হারে প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ৮-১০ দিন পর পর ২-৩ বার ফসলে স্প্রে করে রোগটি দমন করা যেতে পারে। বিছাপোকা: এ পোকা ডিম পাড়ার সাথে সাথে ডিমসহ পাতা ছিড়ে কেরোসিন মিশ্রিত পানিতে বা ডিজেলে ডুবিয়ে মেরে ফেলা যেতে পারে। পোকার আক্রমন বেশি হলে নাইট্রো ৫০৫ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মি.লি. মিশিয়ে স্প্রে করেও বয়স্ক কীড়া দমন করা যেতে পারে। জলাবদ্ধতা বা অতিরিক্ত আর্দ্রতা তিল গাছের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এক্ষেত্রে দ্রুত গোড়া পঁচা রোগ হয়ে তিলগাছ মরে যায়। এ জন্য তিল চাষের জমি প্রস্ত্ততের সময় পানি নিষ্কাশনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। |
প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন তেল ফসল বিশেষজ্ঞ |
(সকাল ৯ টা-বিকাল ৫টা) কল করুনঃ +৮৮-০১৭২০৫৮৫১২৪ ই-মেইলঃ emonbina@yahoo.com
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম ও পদবী ড. রেজা মোহাম্মদ ইমন উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ বিনা, ময়মনসিংহ-২২০২ |
চিত্র: বিনাতিল-৩ এর মাঠ ও বীজ