জাতের নামঃ |
বিনাধান-১৯ |
জাতের বৈশিষ্ট্যঃ |
খরা সহিষ্ণু নেরিকা-১০ জাত থেকে উদ্ভাবিত প্রচন্ড খরার সময় গাছের বাড়বাড়তি বন্ধ থাকে। আবার যখন অনুকূল পরিবেশ আসে তখন দ্রম্নত বাড়বাড়তি সম্পন্ন করে স্বাভাবিক ফলন দিতে সক্ষম আউশ ও আমন মৌসুমে চাষ উপযোগী বরেন্দ্র ও পাহাড়ী এলাকাসহ সারাদেশে বৃষ্টি নির্ভর অবস্থায় সরাসরি রোপন (ডিবলিং) উপযোগী সেচের পানি সাশ্রয়ী জীবনকাল ৯৫-১০৫দিন আউশ মৌসুমে গড় ফলন ৩.৮৪ টন/হে. ও সর্বোচ্চ ফলন ৫.০ টন/হে. আমন মৌসুমে গড় ফলন ৫.১৬ টন/হে. ও সর্বোচ্চ ফলন ৫.৫টন/হে. চাল সরু ও লম্বা |
জমি ও মাটিঃ |
বেলে দো-আঁশ এবং এটেল দো-আঁশ জমি বিনাধান-১৯ চাষের উপযোগী। যে জমিতে পানি জমে থাকে সে সমস্ত জমি জাতটি চাষা বাদের উপযোগি নয়। বিনাধান-১৯ খরা সহিষ্ণু জাত হওয়ায় শুষ্ক মাটি বেশি পছন্দ করে। |
জমি তৈরীঃ |
জাতটির চাষাবাদ পদ্ধতি অন্যান্য উফশী রোপা আউশ জাতের মতই। এছাড়া খরা সহিষ্ণু জাত হওয়ায় বৃষ্টি নির্ভর অবস্থায় সরাসরি সারিতে বপন( ডিবলিং) পদ্ধতিতে চাষ করা যায়। |
বপন ও রোপণের সময়ঃ |
খরিফ-১ মৌসুমে অঞ্চলভেদে মধ্য মার্চ (১ লা চৈত্র) হতে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ (১৫ ই বৈশাখ) পর্যন্ত বীজতলায় বীজ ফেলে ২০-২৫ দিনের চারা এপ্রিলের ১ম সপ্তাহ (চৈত্রের তয় সপ্তাহ) হতে শেষ সপ্তাহ (বৈশাখের ৩য় সপ্তাহ) হতে পর্যন্ত রোপণ করলে ফলন ভালো পাওয়া যায়। |
বীজ হারঃ |
প্রতি হেক্টর জমি চাষের জন্য ২৫-৩০ কেজি বা এক একর জমির জন্য ১০-১২ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়। |
বীজ শোধনঃ |
প্রতি ১০ কেজি বীজে ২০-২৫ গ্রাম ভিটাভ্যাক্স-২০০ বা ব্যাভিস্টিন ব্যবহার করা যেতে পারে। বীজ শোধনের জন্য মাত্রানুযায়ী ছত্রাকনাশক মিশিয়ে একটি বদ্ধ পাত্রে ৪৮ ঘন্টা রাখা আবশ্যক। এছাড়া শোধনের জন্য বীজ ৫২-৫৫ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রার পানিতে ১৫ মিনিট ডুবিয়ে রেখে জীবাণুমুক্ত রাখা যায়। |
সার ও প্রয়োগ পদ্ধতিঃ |
প্রতি হেক্টরেঃ. ইউরিয়াঃ ১৬৩-১৮৫ কেজি, টিএসপিঃ ৭৫-১০০ কেজি, এমওপিঃ ৬০-৮০ কেজি, জিপসামঃ ৬৬-৮৮ ও জিংক সালফেট ৫.৫-৬ কেজি । প্রয়োগের নিয়মঃ রোপার জন্য জমি তৈরীর শেষ চাষের আগে সম্পূর্ণ টিএসপি , এমওপি, জিপসাম ও জিংক সালফেট জমিতে সমভাবে ছিটিয়ে চাষের মাধ্যমে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সারের এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ চারা রোপনের ৭-১০ দিন পর, এক-তৃতীয়াংশ ইউরিয়া পরিমাণ চারা রোপনের ১৫-২০ দিন পর এবং বাকি এক-তৃতীয়াংশ ইউরিয়া পরিমাণ চারা রোপনের ২০-২৫ দিন পর জমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার প্রয়োগের ২/১ দিন আগে জমির অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে হবে এবং প্রয়োজন হলে আগাছা দমন করতে হবে। জমির উর্বরতা ও ফসলের অবস্থার উপর নির্ভর করে ইউরিয়া সার প্রয়োগ মাত্রার তারতম্য করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে টিএসপি ও জিংক সালফেট সার একই সাথে প্রয়োগ করা যাবেনা। তাই এক্ষেত্রে একচাষ পূর্বে টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে এবং শেষ চাষের সময় ইউরিয়া ছাড়া অন্যান্য সার ছিটিয়ে প্রয়োগ করা আবশ্যক। |
সেচ ও নিষ্কাশনঃ |
স্বাভাবিক ভাবে বৃষ্টি নির্ভর অবস্থায় চাষ করা হয়। তবে অতি অনাবৃষ্টির জন্য কুশি ও থোড় অবস্থায় ১-২ টি সেচ দেয়া যেতে পারে। |
আগাছা দমন ও মালচিংঃ |
চারা রোপনের পর আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী বা হাতের সাহায্যে আগাছা পরিষ্কার এবং মাটি নরম করে মালচিং করতে হবে । |
বালাই ব্যবস্থাপনাঃ |
এ জাতটিতে পাতা পোড়া ও খোল পঁচা ইত্যাদি রোগ সহণশীল। এছাড়াও জাতটির বাদামী গাছ ফড়িং প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যান্য জাতের তুলনায় বেশি। তবে জমিতে মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমন দেখা দিলে ক্লোরানট্রানিলিপ্রোল ও থায়মেনথক্সাম গ্রুপের ভিরতাকো ব্যবহার করা যেতে পারে। রোগবালাই যেমন- খোলপচাঁ দেখা দিলে হেক্সাকোনাজল বা ডাইফেনোকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক প্রতি একরে ২০০ মিলি মাত্রায় প্রয়োগ করা যেতে পারে। এছাড়া ব্লাস্ট রোগ দমনের জন্য ট্রুপার/ নাটিভো/ সেলটিমা একরে ১৬০ গ্রাম মাত্রায় প্রয়োগ করা যেতে পারে। |
হেক্টর প্রতি ফলনঃ |
উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিচর্যায় আউশ মৌসুমে গড় ফলন ৩.৮৪ টন/হে. ও সর্বোচ্চ ফলন ৫.০ টন/হে. ও আমন মৌসুমে গড় ফলন ৫.১৬ টন/হে. ও সর্বোচ্চ ফলন ৫.৫টন/হে.। |
প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন ধান ফসল বিশেষজ্ঞ |
(সকাল ৯ টা-বিকাল ৫টা) কল করুনঃ +৮৮০১৭১০৭৬৩০০৩ ই-মেইলঃ makazad.pbdbina@yahoo.com দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম ও পদবী ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ
পরিচালক (প্রশাসন ও সাপোর্ট সার্ভিস) বিনা, ময়মনসিংহ-2202 |
চিত্র: বিনাধান-১৯ এর মাঠ