জাতের নাম |
বিনাধান-২১ |
জাতের বৈশিষ্ট্যঃ |
বিনাধান-২১ আউশ মৌসুমে চাষ করা যায়। পূর্ণ বয়স্ক গাছের উচ্চতা ৯৪-৯৬ সে.মি । গাছ খাটো ও খাড়া বিধায় হেলে পড়ে না। জীবনকাল ১০০-১০৫ দিন খরা প্রবন এলাকায় গড় ফলন ৪.৫ টন/হেক্টর । ১০০০ ধানের ওজন ২১.৩ গ্রাম । চাল সাদা রঙের, লম্বা ও চিকন। চালে অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৪.৯ ভাগ। রান্নার পরে ভাত ঝড়ঝড়া হয় ও খেতে সুস্বাদু। |
আঞ্চলিক উপযোগিতাঃ |
লবণাক্ত এলাকা ছাড়া দেশের খরা পীড়িত বরেন্দ্র অঞ্চলসহ প্রায় সকল উঁচু ও মধ্যম উঁচু জমিতে এ জাতটির ভাল ফলন দেয়। |
জমি ও মাটিঃ |
বেলে দো-আঁশ এবং এটেল দো-আঁশ জমি বিনাধান-২১ চাষের জন্য উপযোগী। |
জমি তৈরিঃ |
খরা সহিষ্ণু এ জাতটির জমি তৈরি পদ্ধতি অন্যান্য আউশ ধানের মতো। |
বপনের সময়ঃ |
আউশ: মধ্য মার্চ (১ চৈত্র) থেকে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ (১৫ বৈশাখ) পর্যন্ত। |
বীজের হারঃ |
প্রতি হেক্টর জমি চাষের জন্য ২৫-৩০ কেজি বা এক একর জমির জন্য ১০-১২ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়। |
বীজ শোধনঃ |
বীজ ৫২-৫৫ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রার পানিতে ১৫ মিনিট ডুবিয়ে রেখে জীবাণুমুক্ত করা যায়। এছাড়াও ২ গ্রাম ব্যাভিস্টিন/ কেজি বা অন্য কোন উপযোগী বীজ শোধক ছত্রাকনাশক পরিমাণমত প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১২ ঘন্টা রেখে পরিস্কার পানি দিয়ে ধূয়ে বীজ শোধন করা যায়। |
সার ও প্রয়োগ পদ্ধতিঃ |
সার প্রয়োগ হেক্টর প্রতি ১৬০ কেজি ইউরিয়া, ৭৫ কেজি টিএসপি , ৬০ কেজি এমওপি, ৬৫ কেজি জিপসাম ও ৫.৫৬ কেজি জিংক সালফেট।
প্রয়োগের নিয়ম
জমি তৈরির শেষ চাষের আগে সম্পূর্ণ টিএসপি, এমওপি, জিপসাম ও দস্তা সার সমভাবে ছিটিয়ে চাষের মাধ্যমে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সারের অর্ধেক পরিমাণ চারা রোপণের ৭-১০ দিন পর এবং বাকি অর্ধেক ৩০-৩৫ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে অথবা এক তৃতীয়াংশ চারা রোপণের ৭-৮ দিন পর, এক তৃতীয়াংশ চারা রোপণের ১৮-২০ দিন পর ও শেষ তৃতীয়াংশ চারা রোপণের ৩০-৩৫ দিন পর জমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে প্রয়োগ করতে হবে। উল্লেখ্য যে, জমির উর্বরতা অনুযায়ী নাইট্রোজেন সারের মাত্রা কম-বেশী হতে পারে। রোপা পদ্ধতিতে চাষের ক্ষেত্রে ইউরিয়া সার প্রয়োগের ২/১ দিন আগে জমির অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে হবে এবং প্রয়োজন হলে আগাছা দমন করতে হবে। জমির উর্বরতা ও ফসলের অবস্থার উপর নির্ভর করে ইউরিয়া সার প্রয়োগ মাত্রার তারতম্য করা যেতে পারে। |
আগাছা দমনঃ |
আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী বা হাত দ্বারা পরিস্কার করে সহজেই আগাছা দমন করা যায়। |
বালাই ব্যবস্থাপনাঃ |
এ জাতে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমন প্রচলিত জাতের চেয়ে কম হয়। তবে প্রয়োজনে বালাইনাশক প্রয়োগ করা উচিৎ। ধানের মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ দেখা দিলে ক্লোরানট্রানিলিপ্রোল গ্রুপের কোরাজেন বা ভিরতাকো ব্যবহার করা যেতে পারে। কোরাজেন প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৩ মিলি বা ভিরতাকো প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১.৫ গ্রাম ৫ শতাংশ জমির জন্য প্রয়োগ করতে হবে। ধানের খোলপড়া রোগের জন্য হেক্সাকোনাজল বা ডাইফেনোকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক প্রতি একরে ২০০ মিলি মাত্রায় প্রয়োগ করা যেতে পারে। এছাড়াও ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা দিলে ট্রুপার প্রতি একরে ১৬০ গ্রাম মাত্রায় প্রয়োগ করা যেতে পারে। |
ফলনঃ |
উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে প্রতি হেক্টরে ৪.৫-৫.০ টন ফলন পাওয়া যায়। |
প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন ধান ফসল বিশেষজ্ঞ |
(সকাল ৯ টা-বিকাল ৫টা) কল করুনঃ +৮৮০১৭১৬-২৮০৭২১ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম ও পদবী |
চিত্র: বিনাধান-২১ এর মাঠ