Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১০ জুন ২০২৪

বিনাধান-২২

 

জাতের নামঃ
বিনাধান-২২
জাতের বৈশিষ্ট্যঃ

উচ্চ ফলনশীল, স্বল মেয়াদি (জীবনকাল ১১২-১১৫ দিন), আলোকঅসংবেদনশীল এবং লম্বা ও চিকন দানা  বিশিষ্ট ।

ধান পরিপক্কতা অবস্থায়ও ডিগপাতা গাড় সবুজ ও খাড়া থাকে।

গাছ শক্ত বলে মোটেই হেলে পড়ে না। পূর্ণ বয়স্ক গাছ ৯১-৯৫ সে. মি. লম্বা।

জমি ও মাটিঃ
লবণাক্ত এলাকা ছাড়া দেশের সকল রোপা আমন অঞ্চল বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর, বগুরা, পাবনা, রাজশাহীসহ  ঢাকা, কুমিল্লা, যশোর, কুষ্টিয়া , পার্বত্য অঞ্চল ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে জাতটির অধিক ফলন পাওয়া যায়।
জমি তৈরীঃ
জাতটির চাষাবাদ পদ্ধতি অন্যান্য উফশী রোপা আমন জাতের মতই। 
বপণের সময়ঃ
জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ হতে জুলাই মাসের ২য় সপ্তাহের (১-৩০ আষাঢ়) মধ্যে বীজ তলায় বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।
বীজ হারঃ
প্রতি হেক্টর জমি চাষের জন্য ২৫-৩০ কেজি বা এক একর জমির জন্য ১০-১২ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়।
বীজ শোধনঃ
উপযুক্ত ফলন নিশ্চিত করতে হলে পুষ্ট ও রোগবালাই মুক্ত বীজ ব্যবহার করতে হবে। প্রতি ১০ কেজি বীজ শোধনের জন্য ২৫ গ্রাম ভিটাভ্যাক্স-২০০ ব্যবহার করলে ভাল হয়।
সার ও প্রয়োগ পদ্ধতিঃ

বীজতলার জন্য

উর্বর ও স্বল্প উর্বর জমিতে বীজতলা তৈরী করলে কোন রূপ সার প্রয়োজন হয়না। অনুর্বর ও স্বল্প উর্বর জমিতে  কেবল দুই কেজি পঁচা গোবর বা আবর্জনা সার প্রয়োগ করলেই চলে। চারা গজানোর পর গাছ হলুদ হয়ে গেলে  দু’সপ্তাহ পর প্রতিবর্গ মিটারে ৭ গ্রাম ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগের পর জমি থেকে পানি নিষ্কাশণ করা যাবেনা।

প্রতি হেক্টরেঃ

ইউরিয়াঃ  ১০০-১২০  কেজি, টিএসপিঃ ৮০-১০০ কেজি, এমওপিঃ ৩০-৩৫  কেজি, জিপসামঃ ২৫-৩৫ কেজি ও দস্তা ১.০-৩.০ কেজি।

 

প্রয়োগের নিয়মঃ

রোপার জন্য জমি তৈরীর শেষ চাষের আগে সম্পূর্ণ টিএসপিএবং  অর্ধেক এমওপি জমিতে সমভাবে ছিটিয়ে চাষের মাধ্যমে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সার অর্ধেক ও এমওপি সারের এক চতুর্থাংশ  পরিমাণ চারা রোপনের ১০-১২ দিন পর,  এবং বাকি অর্ধেক ইউরিয়া ও এমওপি সারের অবশিষ্ট এক চতুর্থাংশ ২৫-৩০ দিন পর জমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার প্রয়োগের ২/১ দিন আগে জমির  অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে হবে এবং প্রয়োজন হলে আগাছা দমন করতে হবে। জমির উর্বরতা ও ফসলের অবস্থার উপর নির্ভর করে ইউরিয়া সার প্রয়োগমাত্রার তারতম্য করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে টিএসপি ও দস্তা সার একই সাথে প্রয়োগ করা যাবেনা। তাই এক্ষেত্রে এক চাষ পূর্বে টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে এবং শেষ চাষের সময় ইউরিয়া ছাড়া অন্যান্য সার ছিটিয়ে প্রয়োগ করা অবশ্যক।

 সেচ ও নিষ্কাশনঃ
সেচের খুব একটা প্রয়োজন হয়না,  তবে প্রয়োজন হলে সেচ দিতে হবে। ধান পাকার ১০-১২ দিন আগে জমির পানি শুকিয়ে ফেলা ভাল।
আগাছা দমন ও মালচিংঃ
চারা রোপনের পর আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী বা হাতের সাহায্যে আগাছা পরিষ্কার এবং মাটি নরম করতে হবে ।
বালাই ব্যবস্থাপনাঃ
এ জাতের রোগ বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়। তবে প্রয়োজনে বালাইনাশক প্রয়োগ করা উচিত। এ জাতটি মাজরা পোকার প্রতি মধ্যম প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। মাজরা পোকার আক্রমন এর সম্ভাবনা থাকলে দানাদার কীটনাশক (রাজধান-১০জি) প্রথম কিস্তি ইউরিয়া সারের সাথে মিশিয়ে ছিটিয়ে দিতে হবে । তবে যদি মাজরা পোকা আক্রমন হয়েই থাকে সেক্ষেত্রে ভিরতাকো স্প্রে করতে হবে। বাদামি গাছ ফড়িং (BHP) আক্রমন করলে কারটাপ জাতীয় সপসিন/মিপসিন স্প্রে করতে হবে। ব্যাকটরিয়াল লিফ ব্লাইট এর লক্ষণ দেখা দিলে বিসমার্থিওজল গুপের (ব্যাকট্রেল) ২ গ্রাম/লিটার হিসেবে স্প্রে করতে হবে। এছাড়া ব্লাস্ট রোগ দমনের জন্য ট্রুপার একর প্রতি ১৫০ মিলি হারে ২০০ লিটার পানিতে সেপ্র করা যেতে পারে। খোল ঝলসানো বা সিথব্লাইট রোগ দেখা গেলে ফলিকুর (টেবুকোনাজল) বা স্কোর (ডাইফেনোকোনাজল) একর প্রতি ২০০ মিলি হারে ২০০ লিটার পানিতে মিশিয়ে থোর আসার সময় বা তার পরপরই সেপ্র করা যেতে পারে। পোকামাকড় দমনের জন্য আইপিএম পদ্ধতিই সবচেয়ে ভাল ।
ফলনঃ
গড় ফলন ৬.১ টন/হেক্টর এবং সর্বোচ্চ ফলন ৬.৫ টন/হেক্টর ।

 

প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন ধান ফসল বিশেষজ্ঞ

(সকাল ৯ টা-বিকাল ৫টা)

কল করুনঃ ০১৭৫৬৯২৬৬৮০

ই-মেইলঃ imtiazukm@gmail.com

ড. মোঃ ইমতিয়াজ উদ্দিন

মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধান

বায়োটেকনোলজি বিভাগ, বিনা, ময়মনসিংহ-২২০২।