আকস্মিক বন্যা হতে রক্ষা পেতে জলমগ্নতা সহিষ্ণু ধানের জাত বিনাধান-১১ এবং চাষী ভাইদের করণীয়
জাতটির বৈশিষ্ট্য: বিনাধান-১১ স্বল্পমেয়াদী উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত। বীজতলা কিংবা চারা রোপনের ২-৩ দিন পর থেকে ২০-২৫ দিন পর্যন্ত পানিতে ডুবে গিয়ে চারা গাছের উপরের অংশ পঁচে গেলেও মূল গাছ পুনরায় বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক ফলন দেয়। জাতটির জীবনকাল ১১০-১১৫ দিন এবং ফলন জলমগ্ন অবস্থায় ৪.০-৪.৫ টন/ হেক্টর এবং জলমগ্ন না হলে স্বাভাবিক অবস্থায় ৫.০-৫.৫ টন/হেক্টর। চাল লম্বা ও মাঝারী।
যেসব চাষী ভাইয়েরা এ জাতটি জুলাই এর মধ্যে বা বন্যার আগে বপন/রোপন করেছেন সেসব জমি যদি বন্যার পানিতে ২০ থেকে ২৫ দিন নিমজ্জিত হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে নিম্নলিখিত পরামর্শগুলো অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
সার প্রয়োগ মাত্রা: যদি ধান গাছের প্রাথমিক বৃদ্ধি পর্যায়ে বন্যা হয়, তাহলে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার ১০ দিন পরে প্রথম কিস্তিতে একর প্রতি ১৮ কেজি (বিঘা প্রতি ৬ কেজি) ইউরিয়া সার এবং একর প্রতি ৯ কেজি (বিঘা প্রতি ৩ কেজি) এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম কিস্তির ২০-২৫ দিন পর একর প্রতি ১৮ কেজি (বিঘা প্রতি ৬ কেজি) ইউরিয়া সার দ্বিতীয়বার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। তবে জমির উর্বরতা অনুযায়ী ইউরিয়া সারের মাত্রা কম বেশী হতে পারে।
রোগবালাই: এ জাতটি মাজরা পোকার প্রতি মধ্যম প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। মাজরা পোকার আক্রমন হলে দানাদার কীটনাশক (মার্শাল ৬ জি/কুরাটার ৫ জি) জমিতে স্প্রে করা যেতে পারে। খোল ঝলসানো বা সিথব্লাইট রোগ দেখা গেলে ফলিকুর (টেবুকোনাজল) বা স্কোর (ডাইফেনোকোনাজল) একর প্রতি ২০০ মিলি হারে ২০০ লিটার পানিতে মিশিয়ে থোর আসার সময় বা তার পরপরই স্প্রে করা যেতে পারে। এছাড়া ব্লাষ্ট রোগ দমনের জন্য ট্রুপার একর প্রতি ১৫০ মিলি হারে ২০০ লিটার পানিতে স্প্রে করা যেতে পারে। পোকামাকড় দমনের জন্য আইপিএম পদ্ধতিই সবচেয়ে ভাল।
বিশেষ সতর্কতা ও করণীয়:
ফসল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ: ফসল কর্তনের পর ভালভাবে মাড়াই করে ২ থেকে ৩ বার রোদে শুকিয়ে ১২ থেকে ১৪% আর্দ্রতায় সংরক্ষণ করতে হবে।
যোগাযোগঃ
প্রয়োজনে ধান ফসল ও সংশ্লিষ্ট জাত বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন
(সকাল ৯ টা-বিকাল ৫টা)
ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম
মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং বিভাগীয় প্রধান
উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ
বিনা, ময়মনসিংহ
মোবাইল: ০১৭১৬-২৮০৭২০
E-mail: mirza_islam@yahoo.com